ঘরোয়া উপায় সেনসিটিভ ত্বকের পরিচর্যায়

আমাদের প্রত্যেকের ত্বকের ধরন ভিন্ন। তবে সব থেকে ঝামেলা পোহাতে হয় যাদের ত্বক সংবেদনশীল। না জানি কখন কোন প্রোডাক্টে ত্বকে রিয়্যাকশন দেখায় এমন কি সংবেদনশীল ত্বকে প্রাকৃতিক উপাদানও কিছু কিছু আছে যা সুট করে না। তবে একেক জনের একেক প্রোডাক্টে বা প্রাকৃতিক উপাদানে সেনসিটিভিটি থাকতে পারে সেনসিটিভ ত্বকে সাধারণত লালচে ভাব দেখা দেয় এবং এলার্জি প্রবণ হয়ে থাকে তাই সেনসিটিভ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার জন্য এই ত্বকের চাই বিশেষ যত্ন


সেনসিটিভ ত্বকের ক্ষেত্রে গরমকালে ত্বকের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। এই সময় ত্বকের সিবাম সিক্রিশন বেড়ে যায় এবং এর থেকে লাল লাল রেসের সমস্যা হতে পারে। তাই এই সময় প্রতিদিন সঠিকভাবে  যত্ন করা খুব প্রয়োজন।


সেনসিটিভ ত্বকের যত্ন কি করে ঘরোয়া উপায়ে করবেন, সেই রকম কিছু টিপস আজকের পোস্টে রইল।


প্রথমেই আসি ক্লেনজিং এর। যে কোন রকমের ত্বকের যত্নের প্রথম ধাপ হল ক্লেনজিং। সেনসিটিভ ত্বকে ক্লেনজিং  করার জন্য আমন্ড তেল বা জোজোবা তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি যেমন ত্বক সঠিকভাবে পরিষ্কার করে, তেমনই ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় রাখে


সেনসিটিভ ত্বকে বেশি এক্সফোলিয়েট করা উচিত্ নয়, কিন্তু গরমকালে অয়েল বা সিবাম সিক্রিশন বেশি হয় বলে ত্বকে সহজেই ধুলোময়লা জমে যায় এবং এর থেকে ব্রণর সমস্যাও দেখা যায়। তাই এই ধরনের ত্বকে গরমকালে এক্সফোলিয়েশন করতে হলে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে করা ভাল। এক্সফোলিয়েশনের জন্য আঙুর ওটমিলের প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। আঙুরে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে সাহায্য করে এবং অন্যদিকে ওটমিল ত্বক স্মুদ করতে সাহায্য করবে। এর জন্য কয়েকটা পাকা আঙুর ওটমিল একসঙ্গে মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে নেবেন। এই পেস্ট মুখে গলায় লাগিয়ে আঙুলের ডগা দিয়ে হালকা মাসাজ করে নিন কিছুক্ষণ রেখে ভাল করে ধুয়ে নেবেন


টোনার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন শশা ও গাজরের রস। এক কাপ শশার রস এক কাপ গাজরের রস মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। যখনই মুখ পরিষ্কার করবেন, ময়েশ্চরাইজার লাগানোর আগে অবশ্যই এই টোনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না

ফেসপ্যাক ক্ষেত্রেও ফলের প্যাক ব্যবহার করাই ভাল। কিন্তু যেসব ফলে আপনার অ্যালার্জি আছে, সেসব ব্যবহার না করাই ভাল। সেনসিটিভ ত্বকের জন্য শসা ঘরে পাতা টক দইয়ের প্যাক খুব উপকারি। শসা টক দইয়ের প্যাক তৈরি করে মুখে গলায় ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে নেবেন


সবশেষে ময়শ্চারাইজিংয়ের পালা। আপনি যদি ঘরে তৈরি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে চান তাহলে এক কাপ গোলাপজলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন অ্যালোভেরার রস মেশান। ফ্রিজে রেখে এটি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারবেন নয় তো মধু গোলাপজলের মিশ্রণ ত্বক নরম রাখতে দারুণ কাজে দেয়। ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর হালকা গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন

কিছু সতর্কতাঃ

১। প্রথমেই জানতে হবে কোন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান আপনার ত্বকে সুট করে। এই পরীক্ষাটা নিজেকেই করতে হবে। সে সমস্ত উপাদান ব্যবহারের পরে ত্বকে জ্বালা পোড়া করছে বা লাল লাল দানা মতো র‍্যাশ দেখা দিচ্ছি, তাহলে বুঝতে হবে সেই সব প্রাকৃতিক উপাদান আপনার জন্য নয়।

২। ত্বকে খুব বেশি র‍্যাশের সমস্যা থাকলে এক্সফোলিয়েট করা একদমই উচিৎ নয়

৩। সেসব প্রোডাক্ট বর্জন করতে হবে যেগুলোতে এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল প্রপার্টিস, অ্যালকোহল এবং রেটিনয়েডস বা আলফা হাইড্রক্সি এসিড রয়েছে।

৪। ক্লিনজার বা ফেস ওয়াশ কেনার সময় এসব জিনিস দেখে নিতে হবে এবং সেনসিটিভ ত্বকের জন্য যে আলাদা ফেস ওয়াশ রয়েছে সেটা কিনতে হবে ময়েশ্চারাইজার কেনার সময় দেখে নিতে হবে যাতে কম উপাদান রয়েছে এবং হালকা বা কোন সুগন্ধ নেই 

৫। সাবানের ক্ষেত্রে ডিওডোরেন্ট বা অতিমাত্রায় সুগন্ধযুক্ত সোপে রয়েছে, তাতে শক্তিশালী ডিটারজেন্ট যা সেনসিটিভ ত্বকে একদমই ব্যবহার করা উচিত নয়

টিপসগুলি ভালো লাগলে লাইক ও সেয়ার করুন !



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্য