ভেষজ উপাদানে রূপচর্চা



আজ-কালকার আধুনিক ক্রিম ও ফেসওয়াশ রূপচর্চার অনেকটা জায়গা দখল করেছে। কিন্তু তাই বলে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রূপচর্চা করা কি আমরা ছেড়ে দিয়েছি? একদমই না। আসলে প্রাকৃতিক উপাদান কাছে এ সব আধুনিক ক্রিম ও ফেসওয়াশ একেবারেই নস্যি। তাই তো ভেষজ উপাদান দিয়ে রূপচর্চার প্রতি আকর্ষণ রয়ে গেছে প্রায় সকল তন্বীদেরই সমস্ত ব্যস্ততার মাঝেও আমরা এখনোভেষজ উপাদান দিয়ে  টুকিটাকি রূপচর্চা করে থাকি। অনেকেরই হতো জানেন, তবু আজ আমি তেমনই সব ভেষজ উপাদান দিয়ে রূপচর্চা কি ভাবে করা যেতে পারে সেটাই নিচে উল্লেখ করলাম  

আমলকী

আমলকী খেলে মুখের রুচি বাড়ে, চুল পড়া বন্ধ হয় এবং ত্বক ও চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। আর আমলকীর গুঁড়া ও তিলের তেল মিশিয়ে মুখে লাগালে যেমন শুষ্ক ত্বক কোমল হবে, তেমন ত্বক ফর্সাও করবে। আবার চুলে আমলকীর রস এক ঘণ্টা লাগিয়ে ধুয়ে ফেললে চুলের অকালপক্বতা দূর হবে।




ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা 

এক চামচ ইসবগুলের ভুসি ও দুই চামচ অ্যালোভেরার রস জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে দেখুন। বাড়তি মেদ তো পালাবেই, দূর হবে বাতের ব্যথাও। অ্যালোভেরার রস মাথার তালুতে ঘষে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। চুল গজাবে ভালো। মধুর সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বকের কালো দাগও দূর করবে, ত্বকও করে তুলবে আরও উজ্জ্বল। এক চা-চামচ অ্যালোভেরা ও এক টেবিল-চামচ লেবুর রস শ্যাম্পুতে মিলিয়ে চুল ধুয়ে নিন। চুলের তৈলাক্ত ভাব কমবে।


হলুদ

কাঁচা হলুদ বেটে নিয়মিত মুখে লাগালে কেবল যে ত্বকের রং উজ্জ্বল হয়, তা-ই নয় বরং এটা ব্রণ ও চর্মরোগ থেকে মুক্তি দেয় । এক গ্লাস দুধের সঙ্গে দুই টেবিল- চামচ কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খান, দেখবেন ত্বকও ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে উজ্জ্বল। কেননা, এটি রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। 




থানকুনি পাতা

থানকুনি পাতা বেটে মাথায় লাগালে মাথা ঠান্ডা হবে। সেই সঙ্গে কমবে চুল পড়ার হার। নিয়ম করে থানকুনি পাতার রস খেলে মনে রাখার ক্ষমতাও বাড়বে দিন দিন।


লেবু

লেবু খেলে একই সঙ্গে চুল, ত্বক ও দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়। লেবু ও মধু মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। ভালো ক্লেনজারের কাজ করবে। সমপরিমাণ লেবু ও নারকেল তেল মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। খুশকির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার এটি একটি দারুন উপায়

তিল

তিল লাগালে চুল পড়া বন্ধ হয়ে চুল কালো হবে, ত্বকের দাগ দূর হবে। এটা খেলে বাতের ব্যথাও দূর হয়। তিলের সঙ্গে মধু ও দুধ মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর হয়।


কাঠবাদাম

কাঠবাদাম খেলে স্নায়বিক শক্তি বাড়ে। আবার কাঠবাদামের সঙ্গে দুধ ও মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগালে সেটা ত্বক উজ্জ্বল করে এবং ত্বকে কোমলতা আনে। কাঠবাদামের পাতা বেটে ত্বকের অ্যালার্জি আক্রান্ত অংশে লাগালে অ্যালার্জি দূর হবে।


দারচিনি

চুল পড়া কমাতে এক চা-চামচ দারচিনির গুঁড়া, এক টেবিল-চামচ মধু এবং এক টেবিল-চামচ অলিভ অয়েল মিলিয়ে শ্যাম্পু করার পাঁচ-দশ মিনিট আগে ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাম্পু শেষে কন্ডিশন করে নিন। ব্ল্যাক হেডস দূর করতে হলে সমপরিমাণ দারচিনির গুঁড়া এবং লেবুর রসের পেস্ট সারা রাত লাগিয়ে রেখে সকালে ধুয়ে নিতে পারেন।


লবঙ্গ

যদি মুখে অনেক ব্রণ থাকে, তাহলে এটি গুঁড়া করে ব্রণের ওপর লাগান। ব্রণ কমে যাবে।



মেথি

মেথি বেটে চুলে লাগালে চুল পড়া কমে, চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে। রাতেই কিছুটা মেথি বেটে হোয়াইট হেডস হয়েছে এমন স্থানে লাগিয়ে রেখে সকালে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সমস্যা কেটে যাবে। মেথি দিয়ে প্রস্তুতকৃত চা খেলে, লবঙ্গ চিবালে, এলাচের দানা চিবালে মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।



এছাড়াও আরও যা করতে পারেন,

১০টি তেজপাতা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে এই জলের সঙ্গে এলাচ গুঁড়া ও মুলতানি মাটি মিলিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে স্নানের আগে ব্যবহার করুন। শরীরের দুর্গন্ধ দূর হবে ও ঘাম কমবে।
জায়ফল গুঁড়া করে দুধের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যায় উপকার পাবেন। দারচিনি বেটে মধুর সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। সমপরিমাণ শসাবাটা এবং গোলাপজল একসঙ্গে ব্যবহার করলে ব্রণের বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করবে। শসা ও লেবুর রস তুলার বলের সাহায্যে ব্যবহার করলে পিগমেন্টেশন দূর হবে। 
চন্দনের গুঁড়া ও গোলাপজল একসঙ্গে মিলিয়ে পেস্ট বানিয়ে ব্যবহারেও উপকার পাবেন। ২০-৩০ মিনিট পর ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্য

  1. Unknown৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ৮:৩৩ PM

    ধন্যবাদ এমন সুন্দর পোস্ট করার জন্য। আমি অনেক দিন ধরে এই রকমের একটি পোষ্ট খুঁজছিলাম। আপনার এই পোস্ট অনেক উপকারে আসবে আমার বিশ্বাস। এর আগেও একটা টিপস্ পেয়েছিলাম। এই টিপসইটও অনেক উপকারী। যার দরকার হবে দেখতে পারেন। আবারো লেখককে ধন্যবাদ না দিয়ে পারছি না। তবে এরকম আরো একটি লেখা পড়েছিলাম ।। এখানে> http://muktomoncho.com/archives/1651

    উত্তর দিনমুছুন