৩ টি সহজ ঘরোয়া পদ্ধতিতে খুশকি দূর করুন



মাথার  তৈলাক্ততায় দরুন ধুলোবালির এসে ত্বকে জমা হয়। আর এর থেকেই খুশকির উপদ্রব দেখা দেয়। তবে এটাই কিন্তু একমাত্র কারন নয়। খুশকি হওয়ার পেছনে আরও নানা কারন আছে। সে নিয়ে অন্য দিন আলোচনা করবো। যাই হোক, খুশকি থেকে মুক্তি পেতে আমরা নামিদামী অনেক শ্যাম্পু ও অন্যান্য চুলের প্রসাধন ব্যবহার করি। কিছুটা উপদ্রব কমলেও সব সময়ের জন্য কিন্তু এর হাত থেকে রেহাই মেলে না। তাছাড়া খুশকির শ্যাম্পুগুলির  মধ্যে এতো বেশি রাসায়নিক জিনিস থাকে, যার প্রভাবে চুলও হয়ে যায় রুক্ষ। কিন্তু তাই বলে তো আর হাতগুঁটিয়ে বসে থাকা যায় না। এই খুশকি দূর করতে বাজারের সামগ্রী  ব্যবহার না করে সব থেকে ভালো উপায় হল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ের উপর নির্ভর করা। যা আমাদের প্রত্যেকেরই ঘরে আছে। আজকের পোস্টে আমি তেমনি তিনটি ঘরোয়া পদ্ধতিতে ও সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে চুলকে খুশকি মুক্ত করার উপায় বলে দিচ্ছি। আশা করি  কাজে আসবে। 


তেলের ব্যবহারে দূর করুন খুশকি

অনেকেই অবাক হতে পারেন তেল ব্যবহার করার কথা শুনে। কারন সবাই জানেন তেল চিটচিটে থাকলে চুলে খুশকির উপদ্রব আরও বেড়ে যায়। কিন্তু এটা ভুলবেন না যে মাথার ত্বক একেবারে শুষ্ক হয়ে গেলেও খুশকি দেখা দেয়। তেল ব্যবহার করবেন কিন্তু বেশি সময় চুলে তেল রাখবেন না। তেল আপনার মাথার ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচায় ও খুশকি মুক্ত করে। যাদের ঠাণ্ডা লাগার ধাত আছে বা ব্রণের সমস্যা আছে তাঁরা বেশিক্ষণ তেল লাগিয়ে রাখবেন না।

পদ্ধতিঃ
চুলকে খুশকি মুক্ত রাখতে চাইলে আপনার লাগবে দু ধরণের তেল। জলপাই তেল (অলিভ অয়েল) এবং বাদামের তেল (আলমন্ড অয়েল) একসাথে মিশিয়ে নেবেন। চাইলে বোতলে একসাথে জলপাই তেল এবং বাদামের তেল মিশিয়ে রেখে দিতে পারেন। দুই তেলের এই মিশ্রণটি চুলে খুব ভালো ভাবে লাগাবেন। বিশেষ করে চুলের গোড়ায়, মাথার ত্বকে। আরেকটা কথা তেল লাগানোর আগে একটু গরম করে নিতে ভুলবেন না। তেল লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিটের মতো। পরে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহার করুন যতদিন না চুল থেকে খুশকি দূর হচ্ছে। বিশেষ টিপ্পনী – তেলে সামান্য কর্পূর মিশিয়ে নিলে আরও ভালো উপকার পাবেন।


ডিম ও লেবুর রসের ব্যবহার

খুশকির উপদ্রব দূর করতে খুবই কার্যকরী ও সহজ একটি পদ্ধতি হচ্ছে লেবুর রসের ব্যবহার। লেবুর রসের সাইট্রিক অ্যাসিড মাথার ত্বক থেকে খুশকি দূর করে। এবং ডিমের প্রোটিন চুলকে ভেতর থেকে স্বাস্থ্যউজ্জ্বল করে ও পুনরায় খুশকির আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

পদ্ধতিঃ
প্রথমে একটি বাটিতে চুলের ঘনত্ব ও লম্বা অনুযায়ী ১ টি বা ২ টি ডিমের সাদা অংশ নিয়ে ফেটিয়ে নিন। পরে এর মধ্যে একটি গোটা লেবুর রস চিপে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মনে রাখবেন এই পদ্ধতিতে অবশ্যই তাজা লেবু ব্যবহার করতে হবে। এরপর মিশ্রণটি ভালো ভাবে পুরো চুলে লাগিয়ে নেবেন। মাথার ত্বকে ভালো করে লাগাবেন। ১৫ মিনিট পরে ঠাণ্ডা পানি ও মৃদু কোন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহারে খুশকির হাত থেকে রেহাই পাবেন।


নিম পাতার ঔষুধি গুণ

নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান। যা মাথার ত্বক থেকে শুধুমাত্র খুশকিই দূর করে না সাথে মাথা ত্বকের ফুসকুড়ি ও অন্যান্য রোগ থেকেও মুক্তি দেয়। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুল খুশকিমুক্ত ও সুন্দর থাকবে।

পদ্ধতিঃ
সাধারণত যারা অল্প ও সাময়িক খুশকির সমস্যায় ভুগছেন তারা ১০-১৫ টি নিম পাতা ৫/৬ কাপ ফুটন্ত গরম জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেললে খুশকি দূর হবে সহজেই। আর যারা দীর্ঘসময় ধরে এই খুশকির উপদ্রব সহ্য করে যাচ্ছেন, তারা প্রথমে নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে বেটে নিন। এরপর ৩০ মিনিট মাথার ত্বকে লাগিয়ে রেখে ভালো করে চুল ধুয়ে নিন। এই নিম পাতা বাটা নিয়ম করে মাথার ত্বকে লাগাবেন প্রতিদিন। এতে করে কয়েকদিনের মাঝেই দীর্ঘস্থায়ী খুশকির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।

 take care

Follow Me on Pinterestটিপসটি ভালো লাগলে লাইক ও শেয়ার করুন।