ডিমের খোসার ১৬ টি ব্যবহার


একটি ডিম এর হাজারও গুন রয়েছে। ডিম কোলেস্টেরল, ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি শরীরেভিটামিন, মিনারেলস্-এর ঘাটতি মেটায়। ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রোটিন। আর হলুদ অংশ নিউট্রিয়েন্টসে ভরপুর। ডিমের এই ভেতরের অংশ যতটুকু কাজের, এর খোসাটা ততটুকুই অকাজের বলে আমাদের মনে হয়। কিন্তু ডিমের এক খোসাকেও যে বহু কাজে লাগাল যায়। আজ আমি ডিমের খোসা কি কি ভাবে ব্যবহার করা যায়, এমনই কিছু  আইডিয়ার সন্ধান দিচ্ছি।

হাতের কাজে ডিমের খোসা

১। খোসায় ভাস্কর্য

এক্ষেত্রে ডিমের ভিতর থেকে তরল অংশ প্রথমে বের করে নেওয়া হয়। তারপর পূর্ণ ডিমের সাদা রঙের খোসায় সূক্ষ্ম হাতে করা হয় কারুকাজ। ডিজাইন করতে প্রথমে ডিমের খোসায় পেন্সিল দিয়ে নক্সা এঁকে নিতে হয়। তারপর অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে কলমের মতো একটি দণ্ড, যার মাথায় থাকে ডায়মন্ড তা দিয়ে খোদাই করে কেটে বানানো হয় নজরকাড়া সব ভাস্কর্য।


২। ফিশাংকি (Pysanky)

Pysanky হচ্ছে ডিমের beeswax বা মোম দিয়ে ডিজাইন তৈরি করা। সম্ভবত এই Pysanky প্রচলন প্রথম ইউক্রেনে দেখা যায়। তখন ইউক্রেনীয় লোকজন তাদের প্রথাগত নিয়ম অনুসারে beeswax দিয়ে ডিমের গায়ে বিভিন্ন নক্সা করে থাকতেন। এই পদ্ধতি অনেকটা কাপড়ে বাটিক করার পদ্ধতি মতোই করা হয়। আরও জানতে হলে নীচের দেওয়া লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।
                               ফিশাংকি কি ভাবে তৈরি কবেন?

গৃহ সজ্জায় ডিমের খোসা

৩। টেবিল ডেকোরেশন

খাবার টেবিল বা লিভিং রুমের টেবিল সাজানো যেতে পারে ডিমের খোসা দিয়ে। ডিমের খোসাকে রং করে নিন। এবার কোন পাত্রে রেখে খাবার টেবিলের উপরে রাখুন। এক রঙের ব্যবহার না করে বিভিন্ন রং করুন, নতুবা ফুল বা বিভিন্ন নক্সা করে সাজিয়ে রাখতে পারেন। ফিশাংকি দিয়েও টেবিল সাজাতে পারেন।

৪। ফুল রাখা পাত্র

এমন কি ডিমের খোসার মধ্যে ছোট ছোট ক্যাকটাস জাতীয় গাছ বা ফুল গাছ লাগিয়ে রাখা যেতে পারে। যেগুলি আবার টেবিল ডেকোরেশনের কাজে ব্যবহার করতে পারেন। অথবা ঘরের অন্য কোথায়ও সাজিয়ে রাখতে পারেন।

৫। মোম রাখার পাত্র

 ডিমের ভেতরের অংশ বের করে, অর্ধেক করে নিয়ে খোসাকে মোম রাখার পাত্র হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।


৬। ঘরের ডেকোরেশন


বাগানে ডিমের খোসার ব্যবহার 

৭। মাটির উর্বরতা বাড়ায়

 শখের ছোট্ট একটি বাগান থাকলে বা টবের মধ্যে গাছ লাগাতে চাইছেন তো, ডিমের খোসা ময়লার বালতিতে না ফেলে দিয়ে মাটির মধ্যে ভালো করে মিশিয়ে দিন। ডিমের খোসা থেকে মাটি পুষ্টি পায়। এতে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।

2
৮। কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার

ডিমের খোসা খুব ভালো প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে  কাজ করে। পোকামাকড়ের হাত থেকেও বিশেষ করে শামুক জাতীয় প্রাণীর হাত থেকে গাছকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় হল গাছের চারপাশে ডিমের খোসা গুঁড়ো করে ছড়িয়ে দিন। 

৯। গাছকে ক্যালসিয়াম যোগায়
টমেটো, লঙ্কা গাছে গোঁড়ায় ডিমের খোসা দিলে ফলন ভালো হয়। কারন ডিমের খোসা গাছকে  ক্যালসিয়াম জোগাতে সাহায্য করে।

১০। অঙ্কুর তৈরির কাজে ব্যবহার

ডিমের খোসায় মাটি ভরে, যে গাছ লাগাতে চাইছেন সেই বীজ লাগিয়ে রাখুন কিছু দিন। অঙ্কুর বের হলে চারা গাছ টি ডিমের খোসা সহকারে মাটিতে পুঁতে দিন। আসলে এই ভাবে গাছ লাগালে গাছটি ডিমের খোসা থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে। 


 ফ্যাশনে ব্যবহার করুন ডিমের খোসা

১১। নেইল আর্ট 

নেইল আর্ট এখন ফ্যাশনে ইন বিষয়। আর এই নেইল আর্ট করতে ব্যবহার করতে পারেন ডিমের খোসা।

ডিমের খোসা দিয়ে গৃহস্থালি টিপ্স 

১২।  চায়ের পাত্রের দাগ বিদায়

যে পাত্রে চা বানানো হয় সেখানে চায়ের গাঢ় দাগ হয়ে যায়। সাবানের সঙ্গে একটি ডিমের খোসা ভেঙে চায়ের পাত্রে দিন। এবার জল ঢেলে দিয়ে তা গরম করুন। একটু ঘষে নিন দেখুন পাত্রটি কেমন ঝকঝকে হয়ে উঠেছে।

১৩। সাদা কাপড়ের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে

ডিমের খোসা সাদা কাপড়কে উজ্জ্বল করতে বেশ সহায়ক। একটি কাপড়ে মুড়িয়ে ওয়াশিং মেশিনের ভেতরে ডিমের খোসা দিয়ে ডিটারজেন্ট দিয়ে কাপড় ধুয়ে দেখুন। সাধারনের তুলনায় অনেক ভালো কাজ করবে।

১৪। হাড়ি পাতিল পরিষ্কারক হিসেবে

ডিমের খোসা দিয়ে অনায়েসেই আপনি রান্নাঘরের বাসনপত্র পরিষ্কারকের কাজটি সেরে ফেলতে পারেন। বাসনপত্রে লেগে থাকা খাবার সরিয়ে ফেলে ডিমের খোসা দিয়ে খুব ভালো করে মেজে নিন। দেখবেন খুব সুন্দর স্ক্রাবারের কাজ করছে।

রূপচর্চায় ব্যবহার 

১৫। স্ক্রাবার

ডিমের খোসাকে রূপচর্চায় প্রাকৃতিক  স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ডিমের খোসাকে শুকিয়ে খুব ভালো করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। যেন গুঁড়ো মিহি হয়। এবার এই গুঁড়ো ফেস প্যাকের সঙ্গে মিশিয়ে স্ক্রাবার হিসাবে ব্যহার করুন।

ক্যালসিয়ামের একটি বড় উৎস

১৬। প্রাণীর খাবার

বাড়ির পোষা কুকুরটিকে ক্যালসিয়াম বুস্ট দিতে চাইলে সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে ওভেনে ২৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় আধা ঘণ্টা রাখুন। এবার এটিকে প্লাস্টিক ব্যাগে নিয়ে গুঁড়ো করুন। কুকুরের খাবারের সঙ্গে এই পাউডার মিশিয়ে দিন।

মুরগিকেও খাদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে এই গুঁড়ো সপ্তাহে একবার খাওয়াতে পারেন। এর ফলে তাদের ডিম উৎপাদনের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং ডিমের আকারও ভালো হবে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে এই গুঁড়ো খাওয়ালে মুরগির প্রজন্ন ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে।

ডিমের খোসার আর যদি নতুন কিছু উপায় আপনাদের জানা থাকে অবশ্যই তন্বীর পাতায় সেয়ার করুন। আর আজকের পোস্টটি কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না।
                                    take care
Follow Me on PinterestFacebook এর আমাদের সঙ্গে থাকুন।