অধিকাংশ ফ্যাশন ব্রান্ডের পত্রিকায় আমরা প্রায়ই দেখে থাকি যে মডেলদের দিয়ে কোন লিপস্টিক এর প্রচারের সময় খুব চামড়া রং ব্যবহার করা হয়। আর আমরা সেই সুন্দর সুন্দর রং দেখে, তাদের অন্ধভাবে তাদের অনুসরণ করি। আসলে এই সব ম্যাগাজিনগুলিতে শুধু মাত্র একই ধরনের গায়ের রঙের মানুষের কথা ভেবে প্রচার চালায়। আর আমরা সেই সব লিপস্টিকের রং দেখেই অভিভূত হয়ে যাই। একবারও কি ভাবি যে রংটা পছন্দ হল সেই রং টা কি আমার শরীরের রঙের সঙ্গে সত্যি কি যাচ্ছে! আজকাল বিভিন্ন ধরনের প্রচারগুলিই যেন আমাদের লিপস্টিক কিনতে গাইড করছে। সে রং আমাদের মানাক বা নাই মানাক।
মেকআপ এর একটা গুরুত্বপূর্ন অংশ হচ্ছে লিপস্টিক। তাই এর নির্বাচন অবশ্যই সঠিক ভাবে হওয়া উচিৎ। প্রথমত, কোন লিপশেডটি বাছবেন সেটি নির্ভর করে আপনার ঠোঁটটি কী ধরনের তার ওপরে। অর্থাৎ, মোটা না পাতলা।দ্বিতীয়ত, আপনার গায়ের রংটি কী রকম। যেমন, ফর্সা ও শ্যামবর্ণাদের ক্ষেত্রে পৃথক ধরনের রং বাছতে হবে। তৃতীয়ত, পোশাকের ধরন ও রঙের ওপর নির্ভর করবে লিপস্টিকের রং।
লিপস্টিকের রং বাছাই করার আগে জেনে নিতে হবে আপনার গায়ের রং কি। তার পর জানতে হবে যে আপনার warm undertone নাকি cool undertone ? সাধারণত undertone জানার উপায় হচ্ছে হাতের শিরা দেখে। যদি আপনার হাতের শিরার রং সবুজ হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনি ওয়ার্ম টোন যুক্ত। আর যদি নীল হয় তাহলে আপনার টোন হল কুল।
আমাদের দেশের মেয়েদের গায়ের রং সাধারণত ওয়ার্ম টোন। সে ক্ষেত্রে হালকা গোলাপি, কমলা, বাদামি, হালকা বেগুনি লিপস্টিকের রং বেশি মানায়।
ফর্সা ত্বকের জন্য লিপস্টিক শেড
মাঝারি ত্বকের জন্য লিপস্টিক শেড
শ্যামবর্ণাদের ত্বকের জন্য লিপস্টিক শেড
পছন্দ যখন গাঢ় রং
আপনার গাঢ় রং পছন্দ হলে লাল অথবা মেরুন রং ব্যবহার করতে পারেন। পৃথিবীর সর্বত্র লাল রঙের লিপস্টিক বহুল প্রচলিত। কিন্তু লাল রং ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। কারণ লাল রঙের অনেক ধরনের শেড হয়। সুতরাং এ ক্ষেত্রেও আপনার গায়ের রং অনুযায়ী শেডটি বাছবেন। যাঁরা ফর্সা, তাঁরা উজ্জ্বল এবং আকর্ষণীয় লাল অনায়াসেই ব্যবহার করতে পারেন। যাঁরা শ্যামবর্ণা, তাঁরা হালকা লাল রং ব্যবহার করবেন।
বিভিন্ন গাঢ় শেড-এর মধ্যে রেজিন, ওয়াইন, কমলা, বেগুনি এই রংগুলি ব্যবহার করতে পারেন। তবে এগুলি সমস্তই সান্ধ্য রং এবং পার্টির জন্য উপযুক্ত। এই রঙের লিপস্টিক ব্যবহারের সময় মাথায় রাখতে হবে, চোখের মেকআপ যেন হালকা হয়। নয়তো সমস্ত মেকআপটি খুবই চড়া হয়ে উঠবে। এ ছাড়া গাঢ় রং ব্যবহারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন ঠোঁটটি যেন অতিরিক্ত গ্লসি না হয়ে যায়।
সকলের জন্য কিছু বেসিক শেড
যে কোনও গায়ের রং এবং যে কোনও আউটফিট (পোশাক)-এর সঙ্গে ব্রাউন অথবা ন্যুড কালারটি একমাত্র বিবেচ্য। এই রংটি খুব স্বাভাবিক এক লুক এনে দেয়। ন্যুড রঙের লিপস্টিক দিনের যে কোনও সময় এবং যে কোনও অনুষ্ঠানে স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারেন। যদি ফরসা হন, তবে পিচ, হালকা পিঙ্ক, ব্রাউন অথবা বেজ রংগুলি আপনার জন্য হবে ন্যুড শেড। কিন্তু শ্যামবর্ণা হলে ন্যুড শেড হবে গাঢ় ব্রাউন, ব্রিক ব্রাউন, রেজিন এই রংগুলি। প্রকৃত অর্থে, আপনার গায়ের রঙের সঙ্গে খুব কাছাকাছি শেডগুলিকে ন্যুড শেড বলা হয়। ন্যুড শেড-এর লিপস্টিক ব্যবহার করলে চোখকে সব সময় হাইলাইট করতে হবে। না হলে প্রাণহীন লাগবে।
হালকা রঙের লিপস্টিক দিনে আর গাঢ় রং রাতে ভালো মানায়। সাধারণত মেকআপ যদি হালকা হয়, সে ক্ষেত্রে গাঢ় লিপস্টিক ব্যবহার করুন। আর খুব ভারী চোখের মেকআপ হলে হালকা বা ন্যাচারাল টোন ভালো মানাবে।মেকআপ ছাড়া শুধু লিপস্টিক ব্যবহার করলে ত্বকের রঙের সঙ্গে মানানসই ন্যুড শেড বেছে নিন।
লিপস্টিকের সঙ্গে সঙ্গে লিপ লাইনারও গুরুত্বপূর্ণ। সব সময় লিপস্টিকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে লিপ লাইনার কিনবেন, অন্য কালারের লিপ লাইনার ব্যবহার করবেন না, দৃষ্টিকটু লাগবে।
এ ছাড়া প্রিয় দু-একটি রং মিলিয়েও বানিয়ে নিতে পারেন পছন্দের রং। যাঁদের ঠোঁট একটু চওড়া তাঁরা বাদামি, বেগুনি বা তামাটে রং ব্যবহার করুন। ঠোঁট যাঁদের পাতলা, তাঁরা গোলাপি, পিচ, হালকা কমলা বা ন্যাচারাল টোনের লিপস্টিক ব্যবহার করুন। পাতলা ঠোঁটে গাঢ় শেড লাগালে ঠোঁটটি বেশি সরু লাগবে।
take care
লেখাটি ভালো লাগলে লাইক ও শেয়ার করুন।